ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ খবর
১৯–২০ জুন: শান্তির আভাস, কিন্ত দৃশ্যে অস্থিরতা
গত মাস থেকেই ইরান–ইসরায়েলের যুদ্ধযাত্রায় হালকা আক্রমণ-প্রতিরোধের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। তবে ১৮ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত একটা আপাত শান্ত অবস্থা বিরাজ করছিল।
তবে সেই শান্তির পরেই ছোটখাটো হামলা শুরু হয়। ইরান দাবি করেছিল, ইসরায়েল যদি হামলা চালায়, তবে তারা প্রতিরোধমূলক প্রতিফলন ঘটাবে। কিন্তু মূল উত্তেজনা শুরু হয় ২২ জুন।
২২ জুন: পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা
২২ জুন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র “অপারেশন মিদনাইট হ্যামার” নামে তিনটি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়—যেগুলো হলো ফোর্ডো, নাতানজ, এবং ইসফাহান।
এই ঘটনাটি শুধুমাত্র এক দেশীয় সংকট উপভোগ করল না, পুরো বিশ্ব ওঠে বসে। কারণ এভাবে সরাসরি সংঘর্ষের পথে হাঁটা বিপজ্জনক পরিস্থিতির সূচনা করে ।
এই হামলায় ক্ষতি সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “নিশ্চিতভাবেই লক্ষ্য ভেঙেছে, তবে মাটির বেশ নিচে আছড়ে পড়েছে” ।
২২–২৩ জুন: ইরানের প্রতিহিংসা এবং হর্মুজ প্রণালীর হুমকি
প্রতিবাদে ইরান ঘোষণা দেয় “অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩” নামে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থলাবলি (তথ্য নেয়া)।
একই সঙ্গে ইরানের পার্লামেন্ট অনুমোদন দেয় Strait of Hormuz (হর্মুজ প্রণালী) বন্ধের একটি প্রস্তাব, যা বিশ্বজুড়ে তেলের বাজারে প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা তৈরি করেছে ।
এই হুমকিতে কেবল বিপজ্জনকতা তৈরি হলো না, বরং তেলের দাম পাঁচ মাসের সর্বোচ্চ পয়েন্টে পৌঁছে গেছে: মাত্র এক দিনেই ব্রেন্ট ক্রুড বেড়ে দাঁড়ায় $78.53; WTI বেড়ে $75.35 প্রতি ব্যারেল . (তথ্য নেয়া)।
২২ জুন: সোরোকা হাসপাতালে ইরানের আক্রমণ
১৯ জুন ইরানের Sejjil ক্ষেপণাস্ত্র নামাযে মিসাইল আঘাত করে ইস্রায়েলের বিখ্যাত সোরোকা হাসপাতাল (Beersheba)–র একটি অংশে। ৫০ জন আহত হন, হাসপাতালে হচ্ছিল রসায়নিক অস্তরাগ, যা এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায় ।
হাসপাতালের কর্মীরা ঘটনাটিকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছে। আক্রমণটি “সীমান্ত পার হচ্ছে” এমন একটি রূপ রেখেছে ।
🌐 ২৩ জুন: ইরানি মিসাইল কাতারে, যে রাষ্ট্রসঙ্ঘটনায় আঘাত
২৩ জুন ইরান Al Udeid (Qatar)–এর মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে, অবশ্য তা কাতারের কর্তৃপক্ষ দ্বারা আটকানো হয় এবং কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি ।
একই সময়ে ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা বিমান হামলা চালায়; ইসরায়েলের আক্রমণে ইরানের IRGC ভবন, ভেতরের সেনা কমান্ডার ইউনিটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়; তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় ।
২৩ জুন: হর্মুজ প্রণালীর অতর্কিত হুমকি & বিশ্ব অর্থনীতির দৃষ্টি
ইরানের পার্লামেন্ট অনুমোদন দিল হর্মুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব; তবে এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়—সরকার ও কাউন্সিলের সম্মতি চাওয়া হবে ।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি হতে পারে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার কৌশল—তবে তারা এও জানাচ্ছে, এটি ইরানের নিজস্ব তেল রপ্তানি নষ্ট হবে; তাই তারা পুরোপুরি বন্ধ নাও করতে পারে ।
🛡️ ২৪ জুন: আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক চাপ
- রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ এমন এক সীমায় নিয়ে যাচ্ছে যা বিশ্বে কঠিন বিপর্যয়ের সূচনা করতে পারে” ।
- ইউরোপিয় দেশ, ফ্রান্স, সৌদি আরব, চীন ও রাশিয়া সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শান্তি আহ্বান জানিয়েছে ।
- Trump বলেন, “এখনই শান্তি প্রয়োজন” এবং যুক্তরাষ্ট্র তখন বলছেন, “যুদ্ধের চাইতে আলোচনাই মূল পথ”—যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বিরতির দিকেই দিক নির্দেশ করছে ।

🔍 সামগ্রিক চিত্র ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
ইতিবাচক স্তম্ভ–সমস্যা
- আলোচনা ও কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে এখনও পর্যন্ত সরে আসা যায়নি।
- বিশ্ব নেতারা যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহী—তারইই প্রমাণ রাশিয়া, চীনসহ সুচিন্তা মেনে নেয়ার কৌশল।
- তেলের দাম ইতিমধ্যে সাড়ে ১৩% বেড়েছে, যা সাম্প্রতিক ১৩ দিনের তুলনায় যথেষ্ট বৃদ্ধি—এতে গরম মৌসুমে জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে ।
ভবিষ্যতের ইতিবাচক ও নেতিবাচক সম্ভাবনা
🔵 আলোচনার দরজা কি খোলা?
- যুক্তরাষ্ট্র নার্মাল পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে — নিউক্লিয়ার আলোচনায় এখনও বাধ্যবাদী স্বরিল অন_satellite।
- ইরান নেতারা বলছেন, “যুদ্ধ না শেষ হওয়া পর্যন্ত থামবে না”; তাই মধ্য পথ খোঁজার চেষ্টা করছে না তারা ।
🔴 সম্ভাব্য জ্বালাঢেলে উঠা
- Hormuz বন্ধ হলে এশিয়া, ইউরোপের জ্বালানি আমদানিতে সংকট হবে; মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো আগের থেকে আরো হার বেড়ে বাড়াবে।
- প্রক্সি যুদ্ধ: স্বল্প দূরত্বে হুতি বা হিজবুল্লাহ–এর মতো গোষ্ঠীগুলোর হামলার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে ।
- সশস্ত্র প্রসার: ISrael বা US নতুন সেনা মোতায়ন করতে পারে; তবে তারা ঝুঁকি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে।
- সাইবার ও ড্রোন যুদ্ধ: মসাদ ও IRGC–র মধ্যকার ড্রোন ভিত্তিক, সাইবার ঘাঁটিগুলি আগের থেকে জোরালো।
দ্রুত পরিবর্তন, অদম্য সম্ভাবনা
এই সপ্তাহে সংঘটিত ঘটনাগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে, এই সংঘাত শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো কনভেনশনাল যুদ্ধ নয়—আমরা এখনও চরম খালা থেকে উিনা পথে হাঁটছে।
যেখানে:
- আর্মড সংঘাত চলছে—US, Israel, Iran সমূহের সরাসরি ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ,
- বিশ্ব অর্থনীতি সংকটের মুখে—তেলের দাম বেড়েছে; বাজার অস্থির,
- আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রশ্নে—Hormuz প্রণালী, কাতারের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা,
- কূটনৈতিক চাপ চলছে—সম্প্রতি রাশিয়া, EU ও চীন শান্তি আহ্বান করছে।
🎯 আপনার মতামত?
- আপনি কি ভাবছেন, আলোচনামূলক শান্তির সম্ভাবনা থাকবে, নাকি এক দীর্ঘ এবং সংকটপূর্ণ সংঘাত শুরু হবে?
- এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার মনে যা এসেছে, কমেন্টে জানিয়ে দিন, এবং যেখানে পারেন শেয়ার করুন।